১০:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মতলব উত্তরে স্বামীর সাথে অভিমান করে বিষ পানে গৃহবধুর আত্মহত্যা

মতলব উত্তর প্রতিনিধি :
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ব্রাহ্মণচক গ্রামে নতুন বিল্ডিং করা নিয়ে স্বামীর সাথে সামান্য কথা কাটাকাটি হওয়ার পরেই বিষ (কেরির ওষুধ) পান করে আত্মহত্যা করেছে শামীমা সুলতানা রুবি (২০) নামে এক গৃহবধু। গত ১৩ এপ্রিল রাত ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পোস্টমর্টেম শেষে স্বামীর অংশগ্রহনেই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণচক গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মাসুম সরকার গত ৩০ মার্চ ছুটিতে বাড়িতে আসেন। ঈদের পর তিনি নতুন বিল্ডিং করার কাজ শুরু করেন। ওই বিল্ডিংয়ের আকার বড় করার জন্য মাসুদের স্ত্রী অনুরোধ করেন। কিন্তু মাসুম জানায় জায়গা যতটুকু আছে সেই হারেই বিল্ডিং হবে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শামীমা বিষ পান করে বসেন। পরে মাসুম তার স্ত্রী শামীমাকে উদ্ধার করে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
নিহতের স্বামী মাসুম সরকার সাংবাদিকদের বলেন, এই ঘটনাটি জানাজানি হলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেন এবং আমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। পরে আামকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে আমি নিজে জানাযার নামাজে উপস্থিত থেকে দাফন সম্পন্ন করেছি। এ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার করা হয়েছে যে, আমি নাকি আমার শ্বশুড় বাড়ির সাথে ৭ লাখ টাকা দিয়ে রফাদফা করেছি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও আমাকে সমাজে ছোট করার জন্য এসব তথ্য ছড়ানো হয়েছে। আসলে আমি আমার স্ত্রীর মরদেহ পরিবহনের জন্য এবং দাফন সম্পন্ন করার জন্য কিছু টাকা দিয়েছি। সেটা আমি নিজের দায়িত্ববোধ থেকেই দিয়েছি।
মাসুমের মা বলেন, আমার ছেলের বউ কোরির ঔষুধ বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। যদি আমার ছেলের কোন দোষ থাকতো তাহলে তো আমার ছেলে পালিয়ে যেত। কিন্তু আমার ছেলে পুলিশের সাথে থানায় গিয়েছে, সে নিজে  তার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেছে। পরে আবার নিজে উপস্থিত থেকে দাফন সম্পন্ন করেছে। আর এই বিষয়ে দাফনের খরছ ছাড়া আর কোন টাকা পয়সা লেনদেন হয়নি।
মতলব উত্তর থানার এসআই সুমন চন্দ্র দাস বলেন, ডিউটি অফিসারের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমি আমার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। সেখানে গিয়ে ভিকটিমের মৃতদেহ দেখি এবং জানতে পারি কেরি ঔষুধ খেয়ে সে আত্মহত্মা করেছে। সেখানে ভিকটিমের স্বামী ও মেয়ের উভয়পক্ষের সোকজন উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তখন আমরা ভিকটিমের স্বামী মাসুমকে থানায় নিয়ে আসি এবং লাশের সুরতাহাল রিপোর্ট তৈরি করে ভিকটিমের লোকজনের কোন অভিযোগ থাকলে মামলা করার পরামর্শ দেই ৷ তারা কোন মামলা করেন নাই। পরে অপমৃত্যুর মামলা করার পর লাশ পোস্টমর্টেমে পাঠানো হয়েছে।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল হক জানান, বিষয়টি জানার পর পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। তিনি আরও জানান, মেয়ের পরিবার অথবা কেউ এ বিষয়ে মামলা করেনি, তাই আটক মো. মাসুম সরকারকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মতলব উত্তরে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিল প্রভাবশালী : আদালতে মামলা

মতলব উত্তরে স্বামীর সাথে অভিমান করে বিষ পানে গৃহবধুর আত্মহত্যা

Update Time : ০৮:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
মতলব উত্তর প্রতিনিধি :
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ব্রাহ্মণচক গ্রামে নতুন বিল্ডিং করা নিয়ে স্বামীর সাথে সামান্য কথা কাটাকাটি হওয়ার পরেই বিষ (কেরির ওষুধ) পান করে আত্মহত্যা করেছে শামীমা সুলতানা রুবি (২০) নামে এক গৃহবধু। গত ১৩ এপ্রিল রাত ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পোস্টমর্টেম শেষে স্বামীর অংশগ্রহনেই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণচক গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মাসুম সরকার গত ৩০ মার্চ ছুটিতে বাড়িতে আসেন। ঈদের পর তিনি নতুন বিল্ডিং করার কাজ শুরু করেন। ওই বিল্ডিংয়ের আকার বড় করার জন্য মাসুদের স্ত্রী অনুরোধ করেন। কিন্তু মাসুম জানায় জায়গা যতটুকু আছে সেই হারেই বিল্ডিং হবে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শামীমা বিষ পান করে বসেন। পরে মাসুম তার স্ত্রী শামীমাকে উদ্ধার করে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
নিহতের স্বামী মাসুম সরকার সাংবাদিকদের বলেন, এই ঘটনাটি জানাজানি হলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেন এবং আমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। পরে আামকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে আমি নিজে জানাযার নামাজে উপস্থিত থেকে দাফন সম্পন্ন করেছি। এ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার করা হয়েছে যে, আমি নাকি আমার শ্বশুড় বাড়ির সাথে ৭ লাখ টাকা দিয়ে রফাদফা করেছি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও আমাকে সমাজে ছোট করার জন্য এসব তথ্য ছড়ানো হয়েছে। আসলে আমি আমার স্ত্রীর মরদেহ পরিবহনের জন্য এবং দাফন সম্পন্ন করার জন্য কিছু টাকা দিয়েছি। সেটা আমি নিজের দায়িত্ববোধ থেকেই দিয়েছি।
মাসুমের মা বলেন, আমার ছেলের বউ কোরির ঔষুধ বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। যদি আমার ছেলের কোন দোষ থাকতো তাহলে তো আমার ছেলে পালিয়ে যেত। কিন্তু আমার ছেলে পুলিশের সাথে থানায় গিয়েছে, সে নিজে  তার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেছে। পরে আবার নিজে উপস্থিত থেকে দাফন সম্পন্ন করেছে। আর এই বিষয়ে দাফনের খরছ ছাড়া আর কোন টাকা পয়সা লেনদেন হয়নি।
মতলব উত্তর থানার এসআই সুমন চন্দ্র দাস বলেন, ডিউটি অফিসারের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমি আমার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। সেখানে গিয়ে ভিকটিমের মৃতদেহ দেখি এবং জানতে পারি কেরি ঔষুধ খেয়ে সে আত্মহত্মা করেছে। সেখানে ভিকটিমের স্বামী ও মেয়ের উভয়পক্ষের সোকজন উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তখন আমরা ভিকটিমের স্বামী মাসুমকে থানায় নিয়ে আসি এবং লাশের সুরতাহাল রিপোর্ট তৈরি করে ভিকটিমের লোকজনের কোন অভিযোগ থাকলে মামলা করার পরামর্শ দেই ৷ তারা কোন মামলা করেন নাই। পরে অপমৃত্যুর মামলা করার পর লাশ পোস্টমর্টেমে পাঠানো হয়েছে।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল হক জানান, বিষয়টি জানার পর পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। তিনি আরও জানান, মেয়ের পরিবার অথবা কেউ এ বিষয়ে মামলা করেনি, তাই আটক মো. মাসুম সরকারকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।