০১:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মতলব উত্তরে তিল চাষে সোনালি সম্ভাবনা : কৃষকদের মুখে হাসি

কম খরচে বেশি লাভ, স্বাস্থ্যসম্মত তেলের চাহিদায় বাড়ছে উৎপাদন

ইসমাইল খান টিটু :
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় তিল চাষ কৃষকদের কাছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। উৎপাদন খরচ কম, পরিশ্রম কম, আর বাজারে ভালো দামের কারণে তিল চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। ভোজ্যতেল হিসেবে তিলের তেলের চাহিদা বাড়ায়, চাষিরা এই ফসলকেই দেখছেন আয়ের নতুন উৎস হিসেবে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) উপজেলার ষাটনল, বাগানবাড়ী ও জহিরাবাদ ইউনিয়নের মাঠঘাট ঘুরে দেখা গেছে, অনেক কৃষক আমন ধান কাটার পর জমিতে তিলের চাষ করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তারা এবার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশায় আছেন।
উপজেলার ষাটনল গ্রামের চাষি শাহীন আলম বলেন, “গত তিন বছর ধরে আমি তিল চাষ করছি। এবার দুই বিঘা জমিতে করেছি। রাসায়নিক সার, কীটনাশক বা সেচ লাগে না। প্রতি বিঘা থেকে ৫-৬ মণ ফলন পাই, এতে আয় হয় ১০-১২ হাজার টাকা। তিল চাষে ঝামেলা কম, লাভ বেশি।”
অন্যদিকে, জহিরাবাদ ইউনিয়নের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, “আগে তিল চাষ করতাম না। আলমগীর ভাইকে দেখে উৎসাহ পেয়েছি। এবার প্রথমবার এক বিঘা জমিতে চাষ করেছি। এখন দেখছি, এই ফসলে খরচ কম, জমিও খালি পড়ে থাকে না। ফলনও আশানুরূপ হচ্ছে।”
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মতলব উত্তরে ২৩ হেক্টর জমিতে তিলের আবাদ হয়েছে। বীজ সহায়তা দেওয়া হয়েছে ২৮০ জন কৃষককে। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছেন ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, “তিল একটি লাভজনক এবং পরিবেশবান্ধব ফসল। কম খরচে উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তিলের তেল অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত, যার বাজার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আমরা চাই তিল হোক মতলব উত্তরের কৃষকদের আর্থিক মুক্তির একটি পথ।”
তিনি আরও জানান, তিল চাষে যদি বাজার ব্যবস্থাপনা সহজ করা যায়, তাহলে এটি হতে পারে এ অঞ্চলের কৃষির জন্য একটি নতুন দিগন্ত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মতলব উত্তরে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিল প্রভাবশালী : আদালতে মামলা

মতলব উত্তরে তিল চাষে সোনালি সম্ভাবনা : কৃষকদের মুখে হাসি

Update Time : ০৫:৪২:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

কম খরচে বেশি লাভ, স্বাস্থ্যসম্মত তেলের চাহিদায় বাড়ছে উৎপাদন

ইসমাইল খান টিটু :
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় তিল চাষ কৃষকদের কাছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। উৎপাদন খরচ কম, পরিশ্রম কম, আর বাজারে ভালো দামের কারণে তিল চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। ভোজ্যতেল হিসেবে তিলের তেলের চাহিদা বাড়ায়, চাষিরা এই ফসলকেই দেখছেন আয়ের নতুন উৎস হিসেবে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) উপজেলার ষাটনল, বাগানবাড়ী ও জহিরাবাদ ইউনিয়নের মাঠঘাট ঘুরে দেখা গেছে, অনেক কৃষক আমন ধান কাটার পর জমিতে তিলের চাষ করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তারা এবার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশায় আছেন।
উপজেলার ষাটনল গ্রামের চাষি শাহীন আলম বলেন, “গত তিন বছর ধরে আমি তিল চাষ করছি। এবার দুই বিঘা জমিতে করেছি। রাসায়নিক সার, কীটনাশক বা সেচ লাগে না। প্রতি বিঘা থেকে ৫-৬ মণ ফলন পাই, এতে আয় হয় ১০-১২ হাজার টাকা। তিল চাষে ঝামেলা কম, লাভ বেশি।”
অন্যদিকে, জহিরাবাদ ইউনিয়নের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, “আগে তিল চাষ করতাম না। আলমগীর ভাইকে দেখে উৎসাহ পেয়েছি। এবার প্রথমবার এক বিঘা জমিতে চাষ করেছি। এখন দেখছি, এই ফসলে খরচ কম, জমিও খালি পড়ে থাকে না। ফলনও আশানুরূপ হচ্ছে।”
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মতলব উত্তরে ২৩ হেক্টর জমিতে তিলের আবাদ হয়েছে। বীজ সহায়তা দেওয়া হয়েছে ২৮০ জন কৃষককে। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছেন ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, “তিল একটি লাভজনক এবং পরিবেশবান্ধব ফসল। কম খরচে উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তিলের তেল অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত, যার বাজার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আমরা চাই তিল হোক মতলব উত্তরের কৃষকদের আর্থিক মুক্তির একটি পথ।”
তিনি আরও জানান, তিল চাষে যদি বাজার ব্যবস্থাপনা সহজ করা যায়, তাহলে এটি হতে পারে এ অঞ্চলের কৃষির জন্য একটি নতুন দিগন্ত।