০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মতলব উত্তরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মারামারি : আদালতে মামলা

ইসমাইল খান টিটু :

মতলব উত্তরের ছেংগারচর পৌরসভার জীবগাঁও গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আপন দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছেংগারচর পৌরসভার জীবগাঁও গ্রামে সম্পত্তিগত বিরোধ নিয়ে ছোট ভাই মোবারক হোসেন ও বড় ভাই নাছির উদ্দীন দুই ভাইয়ের মধ্যে পূর্ব থেকে সম্পতিগত ঝামেলা চলে আসছিল। গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে নাছির উদ্দীন ও তার স্ত্রী সেফালী বেগম এবং সন্তান তানজিলা আক্তার নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হয় এবং ডাক চিৎকার দিলে পার্শ্বের বাড়ি থেকে বিউটি বেগম ছুটে গেলে উল্টো নাছির উদ্দীন ও তার স্ত্রী সন্তান মিলে বিউটি বেগমের উপর হামলা চালায়। ডাক চিৎকার শুরু হলে বিউটি বেগমের স্বামী মোবারক হোসেন ঘটনাস্থলে তার স্ত্রীকে উদ্ধার করতে গেলে তার উপরও হামলা চালায় তারা। এক পর্যায়ে মোবারক হোসেনের মাথায় আঘাত লাগলে মাথা ফেটে রক্তক্ষরণ হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মোবারক হোসেনকে মতলব উত্তর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অন্য দিকে নাছির উদ্দীনও আঘাত প্রাপ্ত হন।
বিউটি বেগম জানান, নাছির উদ্দীন ও তার স্ত্রী সন্তানরা বাড়িতে ঝগড়া লাগলে আমি ছুটাতে গেলে উল্টো তারা সবাই মিলে আমার উপর হামলা চালায়। আমি চিৎকার দিলে আমার স্বামী এগিয়ে আসলে তারা আমার স্বামী মোবারক হোসেনের উপর হামলা চালায়। এতে আমার স্বামীর মাথা ফেটে যায়। আমার স্বামীর গায়ের জামা কাপড় ছিড়ে ফেলেন তারা। নাছির উদ্দীনের মেয়ে তানজিলা আমাকে লক্ষ করে ইট মারলে সেই ইট তার বাবার মাথায় লাগে। পরবর্তীতে আমাদের এলাকার লোকজন আমাদেরকে বলে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করে দেবে। আমরাও তা মেনে নেই কিন্তু এর ফাকে নাছির উদ্দীন আদালতে গিয়ে মামলা করে আমরা স্বামী ও আমার সন্তান এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী মিনহাজের নামে মিথ্যা মামলার দিয়ে ১৩ মার্চ গভীর রাতে পুলিশের মাধ্যমে ধরে নিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। এই ঘটনায় আমার ছোট ছেলে মিনহাজ ছিল না। ও এবার এসএসসি পরীক্ষা দিবে। আমার ছোট্ট বাচ্চাটাকেও জেলে পাঠিয়েছে। আদালত থেকে জামিনে আমার ছেলেকে আনতে পারলেও আমার স্বামীকে এখনো আনতে পারিনি। আমাদের নামে মিথ্যা মামলার দিয়ে তারা হয়রানি করছে। যাতে আমরা তার কাছে সম্পত্তির হিসাব না চাই। এই কারনেই তারা পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। কোন উপায়ান্তু না পেয়ে আমরাও পরবর্তীতে আদালতে মামলা করেছি। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনায় সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
মিনহাজ জানান, আমি রাতে প্রাইভেট পরে বাসায় এসে শুনতে পাই নাছির উদ্দীন জেঠার সাথে আমাদের ঝগড়া হয়েছে। ঐ সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমি এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। তারপরও তারা আমার বয়স বাড়িয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে জেলে পাঠায়। আমি এখন জামিনে মুক্ত। এ ঘটনায় আমি সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, নাছির উদ্দীন ও মোবারক হোসেন এই দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্পত্তি গতভাবে বিরোধ আছে। আমরা স্থানীয়ভাবে বসে মীমাংসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বড় ভাই নাসির উদ্দিনকে কোনভাবেই মীমাংসা হয়নি। এ ঘটনার পরে আমরা বলেছি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে দেবো কিন্তু নাসির উদ্দিন কোন কথা না শুনে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মোবারক হোসেন ও তার ছেলে মিনহাজ কে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মোবারক হোসেনের স্ত্রী বিউটি বেগম বাদী হয়ে আদালতে পাল্টা মামলা করেন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মতলব উত্তরে প্রায় ৫ হাজার কোরবানী পশু প্রস্তুত : দাম নিয়ে শংকায় খামারিরা

মতলব উত্তরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মারামারি : আদালতে মামলা

Update Time : ০৭:৩৩:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

ইসমাইল খান টিটু :

মতলব উত্তরের ছেংগারচর পৌরসভার জীবগাঁও গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আপন দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছেংগারচর পৌরসভার জীবগাঁও গ্রামে সম্পত্তিগত বিরোধ নিয়ে ছোট ভাই মোবারক হোসেন ও বড় ভাই নাছির উদ্দীন দুই ভাইয়ের মধ্যে পূর্ব থেকে সম্পতিগত ঝামেলা চলে আসছিল। গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে নাছির উদ্দীন ও তার স্ত্রী সেফালী বেগম এবং সন্তান তানজিলা আক্তার নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হয় এবং ডাক চিৎকার দিলে পার্শ্বের বাড়ি থেকে বিউটি বেগম ছুটে গেলে উল্টো নাছির উদ্দীন ও তার স্ত্রী সন্তান মিলে বিউটি বেগমের উপর হামলা চালায়। ডাক চিৎকার শুরু হলে বিউটি বেগমের স্বামী মোবারক হোসেন ঘটনাস্থলে তার স্ত্রীকে উদ্ধার করতে গেলে তার উপরও হামলা চালায় তারা। এক পর্যায়ে মোবারক হোসেনের মাথায় আঘাত লাগলে মাথা ফেটে রক্তক্ষরণ হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মোবারক হোসেনকে মতলব উত্তর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অন্য দিকে নাছির উদ্দীনও আঘাত প্রাপ্ত হন।
বিউটি বেগম জানান, নাছির উদ্দীন ও তার স্ত্রী সন্তানরা বাড়িতে ঝগড়া লাগলে আমি ছুটাতে গেলে উল্টো তারা সবাই মিলে আমার উপর হামলা চালায়। আমি চিৎকার দিলে আমার স্বামী এগিয়ে আসলে তারা আমার স্বামী মোবারক হোসেনের উপর হামলা চালায়। এতে আমার স্বামীর মাথা ফেটে যায়। আমার স্বামীর গায়ের জামা কাপড় ছিড়ে ফেলেন তারা। নাছির উদ্দীনের মেয়ে তানজিলা আমাকে লক্ষ করে ইট মারলে সেই ইট তার বাবার মাথায় লাগে। পরবর্তীতে আমাদের এলাকার লোকজন আমাদেরকে বলে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করে দেবে। আমরাও তা মেনে নেই কিন্তু এর ফাকে নাছির উদ্দীন আদালতে গিয়ে মামলা করে আমরা স্বামী ও আমার সন্তান এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী মিনহাজের নামে মিথ্যা মামলার দিয়ে ১৩ মার্চ গভীর রাতে পুলিশের মাধ্যমে ধরে নিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। এই ঘটনায় আমার ছোট ছেলে মিনহাজ ছিল না। ও এবার এসএসসি পরীক্ষা দিবে। আমার ছোট্ট বাচ্চাটাকেও জেলে পাঠিয়েছে। আদালত থেকে জামিনে আমার ছেলেকে আনতে পারলেও আমার স্বামীকে এখনো আনতে পারিনি। আমাদের নামে মিথ্যা মামলার দিয়ে তারা হয়রানি করছে। যাতে আমরা তার কাছে সম্পত্তির হিসাব না চাই। এই কারনেই তারা পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। কোন উপায়ান্তু না পেয়ে আমরাও পরবর্তীতে আদালতে মামলা করেছি। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনায় সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
মিনহাজ জানান, আমি রাতে প্রাইভেট পরে বাসায় এসে শুনতে পাই নাছির উদ্দীন জেঠার সাথে আমাদের ঝগড়া হয়েছে। ঐ সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমি এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। তারপরও তারা আমার বয়স বাড়িয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে জেলে পাঠায়। আমি এখন জামিনে মুক্ত। এ ঘটনায় আমি সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, নাছির উদ্দীন ও মোবারক হোসেন এই দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্পত্তি গতভাবে বিরোধ আছে। আমরা স্থানীয়ভাবে বসে মীমাংসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বড় ভাই নাসির উদ্দিনকে কোনভাবেই মীমাংসা হয়নি। এ ঘটনার পরে আমরা বলেছি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে দেবো কিন্তু নাসির উদ্দিন কোন কথা না শুনে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মোবারক হোসেন ও তার ছেলে মিনহাজ কে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মোবারক হোসেনের স্ত্রী বিউটি বেগম বাদী হয়ে আদালতে পাল্টা মামলা করেন