১০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাতের আঁধারে ফিসারীর ১২ লাখ টাকার মাছ ধরে নেওয়ার অভিযোগ : সংঘর্ষে বিএনপি নেতা গুরুতর আহত

মতলব উত্তর প্রতিনিধি :

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার জহিরাবাদ ইউনিয়নের বড়ইকান্দি গ্রামে রাতের আঁধারে মৎস্য বরোপিটের (ফিসারী) মাছ ধরে নেওয়ার সময় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এতে এখলাছপুর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন বেপারী গণপিটুনিতে মারাত্মক আহত হন। এছাড়াও ওই ফিসারীতে মৎস্যচাষী জহিরাবাদ ইউনিয়নে বড়ইকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে জামাল উদ্দিন (৫০) আহত হয়েছেন।

রবিবার গভীর রাত ৩ টার সময় এ ঘটনা ঘটলে উভয়পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেন। বড়ইকান্দি গ্রামের ফিসারী চাষী জামাল উদ্দিনের অভিযোগে বিবাদী করা হয় দক্ষিণ এখলাছপুর গ্রামের বাখর আলী বেপারীর ছেলে মোঃ কবির হোসেন (৫২), লালমিয়া ভুইয়ার ছেলে মোঃ মুক্তার হোসেন (৩৫), হেলাল উদ্দিন প্রধানের ছেলে মোঃ রাজিব প্রধান (৩৫) ও ফতেহ আলী মোল্লার ছেলে মোঃ আলম (৩৬) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন।

জামাল উদ্দিন অভিযোগে উল্লেখ করেন, জহিরাবাদ ইউনিয়নের সানকিভাঙ্গা- বড়ইকান্দি সাকিনে তার পৈর্তৃক মালিকানা জায়গা সংলগ্ন (পয়স্তিকৃত) পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩ একর জলাশয়ে দীর্ঘ ৩৫ বৎসর যাবত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে শান্তিপূর্ন ভাবে ভোগদখলে আছেন। বিবাদীরা উক্ত জলাশয়ের মাছ বিভিন্ন ভাবে অজ্ঞাতনামা দুষ্টু প্রকৃতির লোকজন সাথে নিয়া রাতের আধারে এমনকি দিনেও জোরপূর্বক মাছ ধরিয়া নিয়া বাদীর ক্ষতি সাধন করে আসছে। বিবাদীদের এই ধরনের জুলুম অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা বাধা নিষেধ করলে, বাদীর বাধা নিষেধ না উপেক্ষা করে বাদীকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি সহ মারধর করে। বিবাদীদের অত্যাচার অবিচারের বিরুদ্ধে স্থানীয় ভাবে বহুবার সালিশ বৈঠক সহ অত্র থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বাদী জামাল উদ্দিন। বিবাদীরা কারো কোন বাধা নিষেধ না মেনে বাদীর জলাশয়ের মাছ ধরে নিয়াদে ক্ষতি সাধন করতে থাকে।

তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার রাতে বিবাদীরা সহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন লোকজন নিয়ে মাছ ধরার জাল দিয়ে ওই ফিসারীর মাছ জোরপূর্বক ধরিয়া নেওয়ার সময় বাদী ঘটনাস্থলে বিবাদীদেরকে দেখতে পেয়ে বাধা নিষেধ করলে, সকল বিবাদীরা তাকে এলোপাথারী ভাবে কিলুঘুষি মেরে বাদীর শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে মাটিতে ফেলে দেয়। তার ডাক চিৎকারে আশপাশ থেকে লোকজন ঘটনাস্থলে আসতে থাকলে সকল বিবাদীরা সহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা অজ্ঞাতনামা ট্রলিগাড়ী যোগে ঘটনাস্থল থেকে জলাশয়ের ধরা মাছ নিয়ে, বাদীকে প্রাননাশের হুমকি ধামকি দিয়া দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। তবে বিবাদীদের নিজস্ব মাছ ধরার জালটি নিতে ব্যর্থ হয়। বিবাদীরা ঘটনার তারিখ ও সময় আমার জলাশয়ের মাছ জোরপূর্বক ধরে নিয়ে আনুমানিক ১২ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধণ করে।

বাদী জামাল উদ্দিন বলেন, ফিসারীটি জহিরাবাদ ইউনিয়নের শেষ সীমানায় পরায় এখলাছপুরের কবির হোসেন গং অবৈধভাবে ভোগদখল করতে চায়। আমার বাড়ি জহিরাবাদ ইউনিয়নের বড়ইকান্দি গ্রামে, ফিসারীও আমাদের গ্রামে পড়ছে। আমার বাপ-দাদার কাছ থেকে পাউবো একোয়ার করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমার লিজ নিয়ে উক্ত ফিসারী ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু কবির বেপারী ও তার লোকজন রাতের আঁধারে আমার মাছ ধরে লুট করে নিয়ে যায়। আমি বুজতে পেরে পাহাড়া বসিয়েছি। কবির বেপারী তার লোকজনকে নিয়ে রাতে মাছ ধরে লুট করার সময় চোর চোর বলে ডাক চিৎকার দিলে তিনি গণপিটুনির শিকার হন। তারা গত কয়েকদিনে আমার ফিসারী থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকার মাছ ধরে নিয়ে গেছে।

আহত কবির হোসেন বেপারীর ছেলে সাবিক বলেন, গভীর রাতে আমার বাবার ডাকচিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার বাবাকে তারা কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। পরে তাকে উদ্ধার করে মতলব হাসপাতালে নিয়ে যাই সেখান থেকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।

মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল হক জানান, এ ঘটনায় মতলব উত্তর থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ হয়েছে। একজন আটক আছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মতলব উত্তরে প্রায় ৫ হাজার কোরবানী পশু প্রস্তুত : দাম নিয়ে শংকায় খামারিরা

রাতের আঁধারে ফিসারীর ১২ লাখ টাকার মাছ ধরে নেওয়ার অভিযোগ : সংঘর্ষে বিএনপি নেতা গুরুতর আহত

Update Time : ০৭:৫৪:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

মতলব উত্তর প্রতিনিধি :

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার জহিরাবাদ ইউনিয়নের বড়ইকান্দি গ্রামে রাতের আঁধারে মৎস্য বরোপিটের (ফিসারী) মাছ ধরে নেওয়ার সময় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এতে এখলাছপুর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন বেপারী গণপিটুনিতে মারাত্মক আহত হন। এছাড়াও ওই ফিসারীতে মৎস্যচাষী জহিরাবাদ ইউনিয়নে বড়ইকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে জামাল উদ্দিন (৫০) আহত হয়েছেন।

রবিবার গভীর রাত ৩ টার সময় এ ঘটনা ঘটলে উভয়পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেন। বড়ইকান্দি গ্রামের ফিসারী চাষী জামাল উদ্দিনের অভিযোগে বিবাদী করা হয় দক্ষিণ এখলাছপুর গ্রামের বাখর আলী বেপারীর ছেলে মোঃ কবির হোসেন (৫২), লালমিয়া ভুইয়ার ছেলে মোঃ মুক্তার হোসেন (৩৫), হেলাল উদ্দিন প্রধানের ছেলে মোঃ রাজিব প্রধান (৩৫) ও ফতেহ আলী মোল্লার ছেলে মোঃ আলম (৩৬) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন।

জামাল উদ্দিন অভিযোগে উল্লেখ করেন, জহিরাবাদ ইউনিয়নের সানকিভাঙ্গা- বড়ইকান্দি সাকিনে তার পৈর্তৃক মালিকানা জায়গা সংলগ্ন (পয়স্তিকৃত) পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩ একর জলাশয়ে দীর্ঘ ৩৫ বৎসর যাবত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে শান্তিপূর্ন ভাবে ভোগদখলে আছেন। বিবাদীরা উক্ত জলাশয়ের মাছ বিভিন্ন ভাবে অজ্ঞাতনামা দুষ্টু প্রকৃতির লোকজন সাথে নিয়া রাতের আধারে এমনকি দিনেও জোরপূর্বক মাছ ধরিয়া নিয়া বাদীর ক্ষতি সাধন করে আসছে। বিবাদীদের এই ধরনের জুলুম অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা বাধা নিষেধ করলে, বাদীর বাধা নিষেধ না উপেক্ষা করে বাদীকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি সহ মারধর করে। বিবাদীদের অত্যাচার অবিচারের বিরুদ্ধে স্থানীয় ভাবে বহুবার সালিশ বৈঠক সহ অত্র থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বাদী জামাল উদ্দিন। বিবাদীরা কারো কোন বাধা নিষেধ না মেনে বাদীর জলাশয়ের মাছ ধরে নিয়াদে ক্ষতি সাধন করতে থাকে।

তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার রাতে বিবাদীরা সহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন লোকজন নিয়ে মাছ ধরার জাল দিয়ে ওই ফিসারীর মাছ জোরপূর্বক ধরিয়া নেওয়ার সময় বাদী ঘটনাস্থলে বিবাদীদেরকে দেখতে পেয়ে বাধা নিষেধ করলে, সকল বিবাদীরা তাকে এলোপাথারী ভাবে কিলুঘুষি মেরে বাদীর শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে মাটিতে ফেলে দেয়। তার ডাক চিৎকারে আশপাশ থেকে লোকজন ঘটনাস্থলে আসতে থাকলে সকল বিবাদীরা সহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা অজ্ঞাতনামা ট্রলিগাড়ী যোগে ঘটনাস্থল থেকে জলাশয়ের ধরা মাছ নিয়ে, বাদীকে প্রাননাশের হুমকি ধামকি দিয়া দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। তবে বিবাদীদের নিজস্ব মাছ ধরার জালটি নিতে ব্যর্থ হয়। বিবাদীরা ঘটনার তারিখ ও সময় আমার জলাশয়ের মাছ জোরপূর্বক ধরে নিয়ে আনুমানিক ১২ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধণ করে।

বাদী জামাল উদ্দিন বলেন, ফিসারীটি জহিরাবাদ ইউনিয়নের শেষ সীমানায় পরায় এখলাছপুরের কবির হোসেন গং অবৈধভাবে ভোগদখল করতে চায়। আমার বাড়ি জহিরাবাদ ইউনিয়নের বড়ইকান্দি গ্রামে, ফিসারীও আমাদের গ্রামে পড়ছে। আমার বাপ-দাদার কাছ থেকে পাউবো একোয়ার করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমার লিজ নিয়ে উক্ত ফিসারী ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু কবির বেপারী ও তার লোকজন রাতের আঁধারে আমার মাছ ধরে লুট করে নিয়ে যায়। আমি বুজতে পেরে পাহাড়া বসিয়েছি। কবির বেপারী তার লোকজনকে নিয়ে রাতে মাছ ধরে লুট করার সময় চোর চোর বলে ডাক চিৎকার দিলে তিনি গণপিটুনির শিকার হন। তারা গত কয়েকদিনে আমার ফিসারী থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকার মাছ ধরে নিয়ে গেছে।

আহত কবির হোসেন বেপারীর ছেলে সাবিক বলেন, গভীর রাতে আমার বাবার ডাকচিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার বাবাকে তারা কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। পরে তাকে উদ্ধার করে মতলব হাসপাতালে নিয়ে যাই সেখান থেকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।

মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল হক জানান, এ ঘটনায় মতলব উত্তর থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ হয়েছে। একজন আটক আছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।